Human Right’s মানবাধিকার ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ক সাহায্য সংস্থার উদ্যোগে মাদক মুক্ত সমাজ গড়ে তোলা ক্যাম্পেইন গঠন করেন মানবাধিকার ও পরিবেশ সংস্থা।
মাদকাসক্তির সংজ্ঞা বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে দিয়েছেন। এখানে কয়েকটি সংজ্ঞা উল্লেখ করা হ’ল।-
Habitual use of certain narcotic that leads in time to mental and moral deterioration, as well as to delaterious social effects‘মাদকাসক্তি হচ্ছে অভ্যাসগত চেতনা উদ্রেককারী দ্রব্যের ব্যবহার। যা মানসিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত করে এবং সামাজিক ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে’।
১৯৮৯ সালে প্রণীত বাংলাদেশ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মাদকাসক্ত বলতে, শারীরিক বা মানসিকভাবে মাদকদ্রব্যের উপর নির্ভরশীল ব্যক্তি বা অভ্যাস বশে মাদকদ্রব্য ব্যবহারকারীকে বুঝানো হয়েছে
এদিকে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এভাবে মাদকাসক্তির সংজ্ঞা দিয়েছে, Intoxication detrimental to the individual and the society produced by the repeated consumption of a drug (Natural and synthetic). ‘নেশা বা মাদকাসক্তি এমন মানসিক বা শারীরিক প্রতিক্রিয়া, যা জীবিত প্রাণী ও মাদকের মিথস্ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয়। এ প্রতিক্রিয়ার উল্লেখযোগ্য লক্ষণগুলো হ’ল, মাদকদ্রব্যটি কমবেশী নিয়মিত গ্রহণের দুর্দমনীয় ইচ্ছা, মাদকদ্রব্য সৃষ্টির ফল বা প্রতিক্রিয়া পাবার তীব্র আকাঙ্খা অথবা মাদকদ্রব্য না থাকার অস্বস্তি এড়ানোর প্রচেষ্টা’
মাদকাসক্তির বৈশিষ্ট্য : উপরোক্ত সংজ্ঞা থেকে মাদকাসক্তির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।-
(১) এটা একটি অভ্যাসগত চেতনা উদ্রেককারী দ্রব্যের ব্যবহার।
(২) এর ব্যবহার মানুষের মানসিক, শারীরিক ও নৈতিক ক্ষতির কারণ।
মাদকদ্রব্য সেবনের ক্ষতিকর দিক সমূহ :
বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ, ভূমিকম্প বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের চেয়ে মাদকাসক্তির ভয়াবহতা আরও মারাত্মক ও ভয়ংকর। একটি পরিবারে বা সমাজে অশান্তি ও বিশৃংখলা সৃষ্টির জন্য একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তিই যথেষ্ট। মাদকদ্রব্য বিষয়ক বিশিষ্ট এক অমুসলিম গবেষক ‘মার্ক এস গোল্ড’ মদের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক বলতে গিয়ে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন।-
১. শারীরিক ক্ষতি : মাদকদ্রব্য সেবনে সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতি হ’ল মানুষের শারীরিক ক্ষতি। যে কারণে একজন মানুষের শরীর ক্রমে ক্রমে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মাদকদ্রব্য সেবনে মানুষ দৈহিক যে সমস্ত ক্ষতির সম্মুখীন হয় তা হ’ল (১) লিভার প্রসারিত হওয়া (২) মুখমন্ডল ফুলে যাওয়া ও বিকৃত হওয়া (৩) মাদকদ্রব্যের প্রতি সংবেদনশীলতা হ্রাস-বৃদ্ধি পাওয়া (৪) মুখ ও নাক লাল হওয়া (৫) মুখমন্ডল সহ সারা শরীরে কালশিরে পড়া (৬) হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া (৭) বুক ও ফুসফুস নষ্ট হওয়া (৮) স্মরণশক্তি কমে যাওয়া (৯) যৌনশক্তি কমে যাওয়া (১০) চর্ম ও যৌন রোগ বৃদ্ধি পাওয়া (১১) স্ত্রীর গর্ভে ঔরসজাত সন্তান বিকলাঙ্গ বা নানারোগে আক্রান্ত হয়ে জন্ম নেয়া (১২) হঠাৎ চোখে কম দেখা (১৩) নাসিকার ঝিল্লি ফুলে উঠা (১৪) ব্রংকাইটিস রোগ বৃদ্ধি সহ বুকের নানা সমস্যা দেখা দেয়া (১৫) সংক্রামক রোগ বৃদ্ধি পাওয়া (১৬) হজমশক্তি হ্রাস পাওয়া ও খাবারের প্রতি রুচি কমে যাওয়া (১৭) দীর্ঘ সময় ধরে ঠান্ডা লাগা ও ফ্লুজ্বরে আক্রান্ত হওয়া (১৮) হঠাৎ শিউরে উঠা (১৯) অপুষ্টিতে আক্রান্ত হওয়া (২০) স্মৃতিশক্তির কোষ ধ্বংস করা।